বর্তমান সময়ে কোমর ব্যাথা (Lower Back Pain) একটি খুবই সাধারণ কিন্তু ভোগান্তিকর সমস্যা। অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করা, ভুলভাবে ভারী জিনিস তোলা, অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার, এমনকি মানসিক চাপ—সবকিছুই কোমর ব্যাথার কারণ হতে পারে।
বাংলাদেশে তরুণ থেকে শুরু করে বয়স্ক—সব বয়সের মানুষই আজ এই সমস্যায় ভুগছেন। অনেকেই ভাবেন কোমর ব্যাথা মানেই বড় রোগ, কিন্তু বাস্তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সহজ কিছু অভ্যাস পরিবর্তন, ঘরোয়া চিকিৎসা ও নিয়মিত ব্যায়ামেই কোমর ব্যাথা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।
আর পড়ুন-মাত্র ২ মিনিটে Google Map দিয়ে মোবাইল লোকেশন বের করার সহজ কৌশল (আপডেট)
কোমর ব্যাথার সাধারণ কারণ
কোমর ব্যাথা হওয়ার পেছনে কিছু সাধারণ কারণ থাকে—
-
দীর্ঘ সময় ভুল ভঙ্গিতে বসে থাকা।
-
ভারী জিনিস হঠাৎ তোলা।
-
নিয়মিত শরীরচর্চার অভাব।
-
অতিরিক্ত ওজন।
-
হাড় ও মাংসপেশির দুর্বলতা।
-
মানসিক চাপ ও ঘুমের সমস্যা।
-
বয়সজনিত সমস্যা।
কারণ বুঝে ব্যবস্থা নিলে ব্যাথা দ্রুত কমানো সম্ভব।
কোমর ব্যাথা সারানোর সহজ ঘরোয়া উপায়
গরম সেঁক
গরম পানির ব্যাগ বা হট প্যাক দিয়ে দিনে ২–৩ বার ১৫–২০ মিনিট সেঁক দিলে—
-
মাংসপেশি শিথিল হয়।
-
রক্ত চলাচল বাড়ে।
-
ব্যাথা কমে।
হালকা বিশ্রাম, তবে সম্পূর্ণ শুয়ে নয়
পুরোদিন বিছানায় শুয়ে থাকা ঠিক নয়। এতে ব্যাথা আরও বেড়ে যেতে পারে।
👉 হালকা হাঁটা ও স্বাভাবিক চলাফেরা জরুরি।
সঠিকভাবে বসা ও ঘুমানো
-
চেয়ারে বসার সময় কোমর সোজা রাখুন।
-
নরম বালিশ বা কুশন ব্যবহার করুন।
-
শক্ত ও সমান বিছানায় ঘুমান।
হালকা ম্যাসাজ
সরিষার তেল বা অলিভ অয়েল হালকা গরম করে কোমরে মালিশ করলে ব্যাথা উপশম হয়।
কোমর ব্যাথা কমানোর সহজ ব্যায়াম
⚠️ ব্যায়াম করার আগে ব্যাথা বেশি থাকলে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
হাঁটু বুকের দিকে আনা (Knee to Chest)
-
চিৎ হয়ে শুয়ে হাঁটু বুকের দিকে আনুন।
-
১০–১৫ সেকেন্ড রাখুন।
-
দিনে ৫–৭ বার।
ক্যাট–কাউ স্ট্রেচ
-
ধীরে ধীরে কোমর সামনে ও পেছনে বাঁকান।
-
মেরুদণ্ড নমনীয় হয়।
-
ব্যাথা কমাতে সহায়ক।
হালকা হাঁটা
প্রতিদিন ২০–৩০ মিনিট হাঁটা কোমরের জন্য খুবই উপকারী।
অফিসে কাজ করলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন
-
একটানা ১ ঘণ্টার বেশি বসবেন না।
-
প্রতি ৩০–৪৫ মিনিট পর দাঁড়িয়ে একটু হাঁটুন।
-
ল্যাপটপ/মনিটর চোখের সমান উচ্চতায় রাখুন।
-
মোবাইল ব্যবহার করার সময় মাথা নিচু করে রাখবেন না।
ওজন নিয়ন্ত্রণ কেন জরুরি?
অতিরিক্ত ওজন কোমরের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়াম—
-
কোমর ব্যাথা কমায়।
-
ভবিষ্যতের ঝুঁকি কমায়।
কখন অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাবেন?
নিচের লক্ষণগুলো দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন—
-
ব্যাথা ২–৩ সপ্তাহেও না কমলে।
-
পায়ে ঝিনঝিনি বা অবশ ভাব হলে।
-
হাঁটতে সমস্যা হলে।
-
জ্বর বা দুর্ঘটনার পর ব্যাথা শুরু হলে।
প্রশ্ন ও উত্তর
১. কোমর ব্যাথা কি ঘরেই ভালো করা যায়?
👉 হালকা ব্যাথা হলে হ্যাঁ, ঘরোয়া উপায়ে অনেক সময় ভালো হয়।
২. কোমর ব্যাথায় গরম না ঠান্ডা সেঁক কোনটা ভালো?
👉 সাধারণত গরম সেঁক বেশি উপকারী।
৩. প্রতিদিন ব্যায়াম করলে কি ব্যাথা কমবে?
👉 হ্যাঁ, নিয়মিত হালকা ব্যায়াম খুব কার্যকর।
৪. কোমর ব্যাথা কি আবার ফিরে আসতে পারে?
👉 ভুল অভ্যাস থাকলে ফিরে আসতে পারে।
উপসংহার
কোমর ব্যাথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও অবহেলা করার মতো নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সঠিক ভঙ্গি, নিয়মিত হালকা ব্যায়াম, ঘরোয়া চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করলেই কোমর ব্যাথা অনেকটাই কমে যায়।
আজ থেকেই যদি একটু সচেতন হন, তবে কোমর ব্যাথা আপনার দৈনন্দিন জীবন আর বাধাগ্রস্ত করবে না।
ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!
আরও পড়ুন-মাত্র ৫ মিনিটে মোবাইল সিম বন্ধ করার সহজ উপায়(আপডেট)
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔


